বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর বিভাগের মাধ্যমে, দুই টি আঞ্চলিক কেন্দ্র (গাজীপুর ও ঠাকুরগাঁও) ও সাতটি উপকেন্দ্র (রাজশাহী, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, দর্শনা, বরিশাল, চুনারুঘাট ও জামালপুর) এর সহযোগিতায় কৃষি কর্মী, কৃষক ও ইক্ষু ও অন্যান্য সুগারক্রপ বিষয়ে আগ্রহী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের কাছে উদ্ভাবত প্রযুক্তিসমূহ হস্তান্তর করে। এ জন্য যেসকল পদ্ধতি ব্যবহৃত হয় তা হল:
প্রশিক্ষণ প্রদান।
প্রদর্শনী আয়োজন।
খামার ও বসতবাড়ী পরিদর্শন।
মেলা আয়োজন ও অংশগ্রহণ।
বুকলেট, লিফলেট, বার্ষিক প্রতিবেদন প্রভৃতি প্রকাশনা।
প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তথ্য প্রচার।
আইসিটি মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যাদির জবাব প্রেরণ ও তথ্য প্রচার।
উপরে উল্লিখিত মাধ্যম গুলি ব্যবহার করে এ যাবত হস্তান্তরিত উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিসমূহ হচ্ছে:
উচ্চ ফলনশীল ও অধিক চিনিযুক্ত ৪৪ টি ইক্ষু জাত উদ্ভাবন। এ জাতসমূহের গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ১০০ টনেরও বেশি এবং চিনি আহরণের হার ১২% এর উর্ধ্বে। এদের মধ্যে কিছু কিছু জাত বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থায় বিশেষ করে লবণাক্ত এলাকায়ও চাষাবাদ উপযোগী।
বাংলাদেশে চাষাবাদ উপযোগী ট্রপিক্যাল সুগারবিটের ৯টি জাত যথা: শুভ্রা, কাভেরী, এইচ আই-০০৪৪, এইচ আই-০৪৭৩, সিএস-০৩২৭, সিএস-০৩২৮, এসজেড-৩৫, পিএসি-৬০০০৮ এবং এসভি-১ প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করা হয়েছে যা বাণিজ্যিকভাবে সুগারবিট চাষের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বন্যা, ঘুর্ণিঝড় প্রভৃতি প্রাকৃতিক দূর্যোগের পর তাৎক্ষণিকভাবে পানি ও পুষ্টির জন্য ইক্ষুর রস ব্যবহার করার লক্ষ্যে বাড়ির আঙ্গিনায় চিবিয়ে খাওয়া আখের কয়েকটি ঝাড় লাগিয়ে উৎপাদিত আখ সারা বছর ব্যবহার করার প্রযুক্তি হস্তান্তরিত হয়েছে।
সাথীফসল সহ ইক্ষু আবাদের কৃষিতাত্ত্বিক প্যাকেজ এলাকা ও পরিবেশের উপর ভিত্তি করে উদ্ভাবন এবং হস্তান্তর করা হয়েছে। যেমন: এক সারি ইক্ষুর সাথে আলু/পিঁয়াজ/রসুন এবং জোড়া সারি ইক্ষুর সাথে আলু/পিঁয়াজ/রসুন-মুগডাল/সবুজ সার ইত্যাদি।
অধিক চিনি আহরণের জন্য এবং আখ চাষকে আরো লাভজনক করতে মুড়ি ইক্ষু ব্যবস্থাপনার আধুনিক প্রযুক্তি প্যাকেজে হস্তান্তরিত করা হয়েচে।
ইক্ষুর সারের মাত্রা ও প্রয়োগ পদ্ধতি, সেচ ও পানি নিষ্কাশন, রোগ বালাই ও পোকা-মাকড় ব্যবস্থাপনা, ইক্ষু চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় কৃষি যন্ত্রপাতি বিষয়ক উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সমূহ হস্তান্তরিত হয়েছে।
চরাঞ্চল ও পাহাড়ী এলাকায় চাষাবাদ উপযোগী লাভজনক গুড় উৎপাদনকারী এবং চিবিয়ে খাওয়া ইক্ষু জাত ও প্রযুক্তি বাছাই এবং গুড় উৎপাদন অথবা সরাসরি বাজারজাতকরণের মাধ্যমে দারিদ্রতা বিমোচনের প্রযুক্তি হস্তান্তর করা হয়েছে।
ভেষজ পদ্ধতিতে পরিষ্কারকৃত হাইড্রোজ বিহীন স্বাস্থ্যসম্মত আখের দানাদার গুড় উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ প্রযুক্তি হস্তান্তর করা হয়েছে।